Dhaka ১১:২৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Breaking News :
Logo ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে বন্ধুর হাতে বন্ধু খুন: আটক-১ Logo ফরিদপুরে আদম ব্যবসায়ীর ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন। Logo খুলনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাদিউজ্জামান হাদির জানাযায় আজিজুল বারী হেলাল। Logo মানিকগঞ্জে চরে বিএনপি’র ঐক্য ও শান্তি সমাবেশ Logo বিষ খাইয়ে প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে মা-বাবা হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার Logo চল্লিশ বছর পর বাংলাদেশ থেকে নিজ দেশে ফিরলো নিপালী নাগরিক Logo চাঁদপুরের কচুয়ায় আগুনে পুড়ল ২০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান Logo কেরুজ চিনিকলে চাকরি স্থায়ীকরণে অনিয়মের অভিযোগ : কেরুর এমডি’কে লিখিত ব্যাখ্যা দেয়ার নির্দেশ সদর দপ্তরের: অন্যথায় আইনগত ব্যবস্থা Logo পাবনার ভাঁড়ারার চেয়ারম্যান সুলতান গ্রেফতার Logo চাটমোহরে উদ্যোক্তাদের তৈরিকৃত স্বাস্থ্যসম্মত সরিষার তেল বিক্রয় প্রসারে বাজার সংযোগ সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে ২য় বারের মত ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা

মাসুদ রানা পলক
  • Update Time : ১১:১৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৪২১ Time View
মাসুদ রানা পলক, ঠাকুরগাঁও :: শীত প্রধান উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বরাবরেই শীতের প্রকোপ একটু বেশিই থাকে। এবারও অব্যাহত রয়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে বেড়েছে ঠান্ডা। আজ রবিবার (২১ জানুয়ারি) জেলায় চলতি মৌসুমের ২য় বারের মত সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এর পূর্বে গত ১৩ জানুয়ারি শনিবারও জেলায় সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
এতে শীতে কাঁপছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনপদ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন নিম্ন-আয়ের ছিন্নমূলের মানুষেরা। ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অফিস না থাকলেও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে তাপ-নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র দিয়ে জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়ে থাকে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আমাদের প্রতিনিধি মাসুদ রানা পলককে জানান, আমরা প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড করি। আজ রবিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমের ২য় বারের মত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন বীজতলা রক্ষার জন্য। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলায় ১২দিন পরে গতকাল সূর্যের দেখা মেল্লেও তাপ তেমন না থাকায় দিনভর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ ছিল। রাস্তায় মানুষও কম। কনকনে ঠান্ডায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। দিনের বেলা সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে তাপ পোহাচ্ছেন অনেকে। অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবনযাত্রা থমকে গেছে। কাজকর্মে গতি কমে যাওয়ায় অনেকের রোজগারও কমে গেছে।
জেলার রোড বাজার এলাকার রিকশাচালক হাসান বলেন, আগে ভোর বেলা রিকশা নিয়ে বের হতাম। এখন শীতের কারণে ভোরে বের হতে পারছি না। অন্যদিকে রিকশায় ঠান্ডা বেশি লাগায় যাত্রীও কম পাচ্ছি। এ কারণে আয়-রোজগার কমে গেছে। শহরের পৌর চৌরাস্তায় কাজের অপেক্ষায় থাকা দিনমজুর মোঃ লুতফর রহমান বলেন, ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে ৫ দিন ধরে কোনো কাজ পাইনি। ঠান্ডার কারণে আয় রোজগারও কমে গেছে। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে। শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাক চালক ইষা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলতায় এবার ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি; সাথে ঠান্ডা হাওয়া। ঘন কুয়াশা থাকার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। শীতে গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। সদর উপজেলার বাকুন্দা গ্রামের কৃষক ইসলামুল বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাছে। আর ধান ছাড়াও ঋণ নিয়ে ১০ কাঠা জমিতে কালাই লাগিয়েছি; কালাইলা উঠানোর সময় হইছে; কিন্ত হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার কারণে কালাইলা তুলতে পারছি না।
ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রম পাড়া এলাকার বাসিন্দা পুহাতু বর্মন বলেন, ৮-১০ দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই; বৃষ্টির মতো দিন-রাত সমান তালে কুয়াশা ঝড়ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ঠান্ডার কারণে পরিবারে লোকজন জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে ১-২ শতাধিক রোগীর মত। এছাড়াও ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় শতাধিক শিশু। শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাজ্জাদ হায়দার শাহিন। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান আমাদের প্রতিনিধি মাসুদ রানা পলককে জানান, জেলায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কৃষি বিভাগ রেকর্ড করেছে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সরকার থেকে পাওয়া ৩৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। আরও চাহিদার কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার্তা পাঠানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সবসময় ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষজনের পাশে ছিল থাকবে।
Tag :

অগ্রযাত্রা স্যাটেলাইট টেলিভিশন (এটিভি বাংলা) লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২ নং শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ স্বরণী, রমনা, ঢাকা-১২১৭।
মোবাইল: ০১৬৪৬৪৪৪৫৩০

Please Share This Post in Your Social Media

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ঠাকুরগাঁওয়ে ২য় বারের মত ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা

Update Time : ১১:১৪:৪৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৪
মাসুদ রানা পলক, ঠাকুরগাঁও :: শীত প্রধান উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ে বরাবরেই শীতের প্রকোপ একটু বেশিই থাকে। এবারও অব্যাহত রয়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে বেড়েছে ঠান্ডা। আজ রবিবার (২১ জানুয়ারি) জেলায় চলতি মৌসুমের ২য় বারের মত সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। তবে এর পূর্বে গত ১৩ জানুয়ারি শনিবারও জেলায় সর্বনিম্ন ১০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
এতে শীতে কাঁপছে ঠাকুরগাঁওয়ের জনপদ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন নিম্ন-আয়ের ছিন্নমূলের মানুষেরা। ঠাকুরগাঁওয়ে আবহাওয়া অফিস না থাকলেও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে তাপ-নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র দিয়ে জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়ে থাকে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম আমাদের প্রতিনিধি মাসুদ রানা পলককে জানান, আমরা প্রতিদিন সকাল ৬টার দিকে তাপমাত্রা রেকর্ড করি। আজ রবিবার (২১ জানুয়ারি) সকাল ৬টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমের ২য় বারের মত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তিনি বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে; আমাদের কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের নানা ধরনের পরামর্শ দিচ্ছেন বীজতলা রক্ষার জন্য। সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলায় ১২দিন পরে গতকাল সূর্যের দেখা মেল্লেও তাপ তেমন না থাকায় দিনভর কুয়াশাচ্ছন্ন পরিবেশ ছিল। রাস্তায় মানুষও কম। কনকনে ঠান্ডায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষেরা। দিনের বেলা সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে খড়কুটো জ্বালিয়ে তাপ পোহাচ্ছেন অনেকে। অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহে নিম্ন আয়ের মানুষদের জীবনযাত্রা থমকে গেছে। কাজকর্মে গতি কমে যাওয়ায় অনেকের রোজগারও কমে গেছে।
জেলার রোড বাজার এলাকার রিকশাচালক হাসান বলেন, আগে ভোর বেলা রিকশা নিয়ে বের হতাম। এখন শীতের কারণে ভোরে বের হতে পারছি না। অন্যদিকে রিকশায় ঠান্ডা বেশি লাগায় যাত্রীও কম পাচ্ছি। এ কারণে আয়-রোজগার কমে গেছে। শহরের পৌর চৌরাস্তায় কাজের অপেক্ষায় থাকা দিনমজুর মোঃ লুতফর রহমান বলেন, ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে ৫ দিন ধরে কোনো কাজ পাইনি। ঠান্ডার কারণে আয় রোজগারও কমে গেছে। স্ত্রী, সন্তান নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে। শহরের বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ট্রাক চালক ইষা বলেন, অন্যান্য বছরের তুলতায় এবার ঠাকুরগাঁওয়ে শীতের তীব্রতা অনেক বেশি; সাথে ঠান্ডা হাওয়া। ঘন কুয়াশা থাকার কারণে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। শীতে গাড়ি চালানো কষ্টকর হয়ে গেছে বলেও জানান তিনি। সদর উপজেলার বাকুন্দা গ্রামের কৃষক ইসলামুল বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাছে। আর ধান ছাড়াও ঋণ নিয়ে ১০ কাঠা জমিতে কালাই লাগিয়েছি; কালাইলা উঠানোর সময় হইছে; কিন্ত হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডার কারণে কালাইলা তুলতে পারছি না।
ঠাকুরগাঁও শহরের আশ্রম পাড়া এলাকার বাসিন্দা পুহাতু বর্মন বলেন, ৮-১০ দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই; বৃষ্টির মতো দিন-রাত সমান তালে কুয়াশা ঝড়ছে। এতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে অনেক কষ্ট হচ্ছে। ঠান্ডার কারণে পরিবারে লোকজন জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালে বেড়েছে শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিনই চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে ১-২ শতাধিক রোগীর মত। এছাড়াও ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রায় শতাধিক শিশু। শিশুদের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের বিভিন্ন রকম পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান হাসপাতালের শিশু বিভাগের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সাজ্জাদ হায়দার শাহিন। ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান আমাদের প্রতিনিধি মাসুদ রানা পলককে জানান, জেলায় শীতের তীব্রতা অনেক বেশি। এ মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কৃষি বিভাগ রেকর্ড করেছে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস। সরকার থেকে পাওয়া ৩৬ হাজার কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে। আরও চাহিদার কারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বার্তা পাঠানো হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসন সবসময় ঠাকুরগাঁও জেলার মানুষজনের পাশে ছিল থাকবে।