জিয়া’র কবর নেই কোথাও: মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন
- Update Time : ০৩:০৫:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ অগাস্ট ২০২২
- / ৪৪৪২ Time View
অনুসন্ধান করে দেখা গেছে যে, ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমানকে একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে হত্যা করা হয় । এই হত্যার পরপরই সার্কিট হাউজের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে বিদ্রোহী সৈনিকরা ।
এ সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার ডিসক্লোজড গোপন নথির বরাতে জানা যায়, ব্রাশ ফায়ারে ক্ষতবিক্ষত জিয়াউর রহমানের লাশটি আসলে গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে ছাইভস্ম করে ফেলা হয়েছিল । এই বক্তব্যের প্রতিবাদ বিএনপি সেই নথি প্রকাশের সময় করেনি । বিক্ষুব্ধ একজন সৈনিক গান পাউডার দিয়ে জিয়াউর রহমানের লাশ পুড়িয়ে ছাইভস্ম করে ফেলেছিলেন । সেই ছাইভস্ম রাঙ্গুনিয়ার একটি পাহাড়ি এলাকায় ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল ।
এর পেছনে মূল কারণ ছিল জিয়াউর রহমানের লাশ নিয়ে যেন কোনো রাজনীতি করা না হয় । কাজেই জিয়াউর রহমানকে প্রথম যেখানে ‘দাফন’ করা হয়েছিল বলে দাবি হচ্ছে- চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায়, সেখানেও জিয়াউর রহমানের দেহ ছিল না বলেই একাধিক আন্তর্জাতিক গবেষণা এবং অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ।
সেখানে আসলে কার লাশ ছিল- সেটি এখনও পর্যন্ত এক বিতর্কিত প্রশ্ন । চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে সেই রাতে জিয়াউর রহমানের অনুগত সৈনিকদেরও হত্যা করা হয়েছিল । তাদের কাউকে কমব্যাট ড্রেস পরা অবস্থায় রাঙ্গুনিয়ায় জিয়াউর রহমান বলে ‘দাফন’ করা হয়েছিল ।
একটি বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই, জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর সেখানে যারা ছিলেন, তারা কেউই জিয়াউর রহমানের লাশ দেখেনি । বিএনপির দুই প্রতিষ্ঠাতা সদস্য- ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এবং অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী (সাবেক রাষ্ট্রপতি) দুজনই জিয়ার মৃত্যুর সময় চট্টগ্রামে ছিলেন । তারা কেউই জিয়াউর রহমানের মরদেহ দেখেননি ।
তাহলে জিয়াউর রহমানের মরদেহ দেখলো কে ?
একাধিক সূত্র বলছে, জেনারেল মঞ্জুরকে হত্যার পর বিদ্রোহ দমন করা হলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় গিয়ে কমব্যাট ড্রেস পরা একটি মরদেহ তুলে আনা হয় ? কিন্তু সেটি যে জিয়াউর রহমানের মরদেহ নয় তা নিশ্চিতই বলা যায় । সাধারণত এসব ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম করতে হয় । কিন্তু জিয়াউর রহমান পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো পোস্টমর্টেম করার অনুমতি দেয়া হয়নি । ফলে রাঙ্গুনিয়ার সেই মরদেহটি ঢাকায় নিয়ে আসা হয় ।
সেই মরদেহের পরনে কমব্যাট ড্রেস ছিল । একজন রাষ্ট্রপতি মাঝরাতে নিশ্চয় কমব্যাট ড্রেস পরে ঘুমাতে যান না !
অর্থাৎ, জিয়াউর রহমানের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোনো এক সৈনিক- যিনি ওই সময় গোলাগুলিতে প্রাণ দিয়েছিলেন, তাকেই রাঙ্গুনিয়ায় সমাধিস্থ করা হয়েছিল । সেটিই জিয়াউর রহমানের লাশ হিসেবে চালিয়ে দেওয়া হয়েছিল ।
এরপর সেই মরদেহ ঢাকায় এনে চন্দ্রিমা উদ্যানে দাফন করার সময়ও কফিন খোলা হয়নি । তাই তার মুখ কেউ দেখেনি ।
চিকিৎসকদের মতে, এসব ক্ষেত্রে পোস্টমর্টেম রিপোর্টটি অত্যন্ত জরুরী । পোস্টমর্টেম করলেই তিনি আদৌ জিয়াউর রহমান কি না, তা বোঝা যেত । কিন্তু কোনো সুরতহাল এবং পোস্টমর্টেম রিপোর্টও করা হয়নি । যার ফলে জিয়াউর রহমানের কবর আসলে কোথাও নেই বলে প্রকাশিত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে যা উঠে এসেছে, সেটিই আসল সত্য বলে মত বিশ্লেষকদের ।
অনেকের অভিযোগ আছে, কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসে কি না- এই চিন্তা থেকেই বিএনপি কখনও দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচার চায়নি । কিন্তু তাকে নিয়ে রাজনীতিটা তারা ঠিকই জিইয়ে রেখেছে ।
দলের কর্মসূচিতে এক দৌড়ে চন্দ্রিমা উদ্যানে কথিত জিয়ার মাজারে হাজির হন নেতাকর্মীরা । কিন্তু সামরিক অভ্যুত্থানে দলের প্রতিষ্ঠাতার হত্যার কোনো বিচার চান না তারা- রাজনৈতিক অঙ্গনে এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা রয়েছে ।