পীরগাছায় লিপি হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ
- Update Time : ০৪:১৫:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ অগাস্ট ২০২২
- / ৪৪৪৪ Time View
মো. একরামুল ইসলাম, পীরগাছা, রংপুর::
রংপুরের পীরগাছায় লিপি আক্তার হত্যার মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। মাদকের কারবার ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ার কারণে লোকলজ্জার ভয়ে নিজের মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাবা রফিকুল ইসলাম। ঘটনাটি উপজেলার সদর ইউনিয়নের তালুক ইসাদ (নয়াটারী) গ্রামের। মঙ্গলবার পীরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুমুর রহমান রফিকুল ইসলামের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, পুলিশের চাকরি করেন এমন ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বাবা রফিকুল ইসলাম। কিন্তু নিজের মেয়ের কারণেই সেই বিয়ে টেকেনি, এমনটাই দাবি করেন তিনি। এরপর বিভিন্ন অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েন লিপি আক্তার। পরে তাকে তার পরিবার জোরপ‚র্বক ঢাকায় একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজে পাঠান। সর্বশেষ গত কোরবানির ঈদের ছুটিতে বাড়িতে এলে মেয়ে অন্তঃসত্ত¡া বলে জানতে পারেন বাবা রফিকুল ইসলাম। এতে তিনি লোকলজ্জার ভয়ে মেয়ের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
একপর্যায়ে গত ২২ জুলাই রাত ১টার দিকে মেয়েকে ঘুমন্ত অবস্থায় গলায় পা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা রফিকুল ইসলাম। পরে বাড়ির পাশের জমিতে পুঁতে রাখেন লাশ। কিন্তু লোকের ভয়ে দুইদিন পর লাশ তুলে দ‚রে নিয়ে গিয়ে একটি আবাদি জমিতে বৈদ্যুতিক খুঁটির নিচে পুঁতে রাখে। এমনি এক লোমহর্ষক ঘটনার সাত দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত ২৫ জুলাই সকালে ওই এলাকার একটি জমি থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেদিনই লাশটি নিজের বোন লিপির বলে দাবি করেন ওই এলাকার শামীম মিয়া। পুলিশ এ ঘটনায় মামলা দায়েরের জন্য তার বাবা রফিকুল ইসলামকে থানায় ডাকে। কিন্তু তিনি মামলা দায়ের গড়িমসি শুরু করেন। তবে একপর্যায়ে তিনি বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলেও সন্দেহ বেড়ে যায় পুলিশের। আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে লিপির অবস্থান বাড়িতেই ছিল বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম ও ভাই শামীমসহ পরিবারের চার সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। একপর্যায়ে মেয়েকে ‘অসামাজিক কার্যকলাপ’ থেকে ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়ে নিজেই হত্যা করেন বলে স্বীকার করেন রফিকুল ইসলাম।
রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সি-সার্কেল) আশরাফুল আলম পলাশ বলেন, রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হলে তিনি স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিম‚লক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালত রফিকুলকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।