এখনো দুর্ভোগের অপর নাম ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক
- Update Time : ০৪:৪৪:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ মার্চ ২০২৪
- / ৪৪১৪ Time View
মাদারীপুর থেকে মাসুদ রেজা ফিরোজী :: ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সাথে সড়কপথে যোগাযোগের একমাত্র প্রবেশপথ হিসেবে ঢাকা-
বরিশাল মহাসড়ক এখন পরিণত হয়েছে দুর্ভোগের সড়কে। সারাদেশের অন্যমহাসড়গুলোতে একাধিক লেন রয়েছে কিন্তু ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক একলেন বিশিষ্ট। এছাড়াও এই মহাসড়কে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলাচল করছে ধীরগতির অবৈধ যানবাহন। এতে করে বাড়ছে চরম দুর্ভোগ। সড়ক ব্যবহারকারীদের দাবি জানিয়েছেন, দ্রুতই এই মহাসড়কে ধীরগতির যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা একই সাথে এই মহাসড়ক একাধিক লেনে উন্নতি করার। সরেজমিন দেখা গেছে, শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে এই মহাসড়কের রাজৈরের টেকেরহাট থেকে মুকসেদপুরের ছাগলছিড়া নামক স্থান পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার যানজট ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়ে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করা হাজার হাজার যাত্রীরা। যাত্রীদের অভিযোগ, মহাসড়ক সরু এবং ধীরগতি অবৈধ যানবাহনের কারণেই এই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে যাত্রী নষ্ট হয়েছে কর্মঘণ্টা। বেড়েছে দুর্ভোগ। ব্যস্ততম এই সড়কে প্রতি মিনিটেই যাওয়া-আসা করে বিভিন্ন যানবাহন। সড়ক সরু এবং চলছে ধীরগতির অবৈধ যানবাহন। এতে যেকোনো সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। একারণে মহাসড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল থেকে মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ হয়ে ফরিদুপরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এ মহাসড়কটি মাত্র ১৮ থেকে ২৪ ফুট প্রস্থ। এরমধ্যে অনেকস্থানে মহাসড়কটির অবকাঠামোগত অবস্থা খুবই নড়বড়ে। ১৯৬০-৬৫ সালের মধ্যে মাত্র পাঁচটন ক্ষমতার বহনক্ষম ১২ ফুট প্রস্থ মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর বিগত ৬০ বছরে দুই পাশে আরো ছয় থেকে ১০ ফুট প্রশস্ত করা হলেও বহন ক্ষমতা আর বাড়েনি। অথচ যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েক শতগুণ। ফলে বেড়েছে দুর্ভোগ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রমতে, ২০১৫ সালে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে বরিশাল হয়ে পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত মহাসড়কটি ছয়লেনে উন্নীত করার সরকারি সিদ্ধান্ত হয়। পরে ২০১৮ সালে ভূমি অধিগ্রহণে সরকার অর্থ ছাড় করে। পাশাপাশি প্রস্তাবিত ছয়লেন মহাসড়কের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও নকশা প্রণয়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ করা হয়। কিন্তু পরামর্শক চূড়ান্ত নকশা জমা দিলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তেমন কোন অগ্রগতি হয়নি। পাশাপাশি ভূমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন করার মেয়াদ ২০২০ সালে নির্ধারিত থাকলেও ২০২৪ সালে এসেও তা আলোর মুখ দেখেনি। একইসাথে দাতার অভাবে প্রকল্পটি স্থবির অবস্থায় পড়ে আছে। ফলে এ মহাসড়কটি ছয়লেনে উন্নীত করণের কাজ কবে নাগাদ শুরু হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। একইসাথে অপ্রশস্ত ও নড়বড়ে মহাসড়কে সীমাহীন গতির যানবাহনে দক্ষিণাঞ্চলের অগণিত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের সংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে। কিন্তু সড়ক প্রশস্ত হয়নি। সরু সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় সড়কের বিভিন্ন অংশে প্রতিনিয়ত যানবাহনগুলো দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। তিনি দ্রুত ব্যস্ততম এ মহাসড়কটি ফোরলেনে উন্নীত করার জন্য সকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। মস্তফাপুর হাই ওয়ে পুলিশেন ওসি মো.মারুফ রহমান বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহ চলাচল বন্ধের জন্য কাজ করছি।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.নাজমুল হাসান বলেন, ভূমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হলে সড়ক প্রশস্তকরণ করা শুরু করা যাবে। ইতিমধ্যে ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণে কারা অর্থায়ন করবে সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে। অতি তাড়াতাড়ি সড়কটি চার লেন করা হবে। তখন কোন আর সমস্যা থাকবে না।